মুখবন্ধ

আবহমান কালের পলিবিধৌত কৃষি নির্ভর বাংলাদেশে ভূ-প্রাকৃতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়াদি বিবেচনায় ১৯৩৮ সালে অভিবক্ত বাংলার সাবেক মূখ্যমন্ত্রী মরহুম শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক এর উদ্যোগ ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তদানিন্তন পূর্বপাকিস্তানের রাজধানী ঢাকার শেরেবাংলা নগরে ৮৬.৯২ একর (৩৫.১৯ হেক্টর) জমির উপর ‘ঢাকা কৃষি কলেজ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। উক্ত কৃষি কলেজটি-কে পরবর্তীতে ‘বাংলাদেশ কৃষি ইন্সটিটিউট’ নামে নামকরণ করা হয়। সময়ের প্রয়োজন ও চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০০১ সনে উক্ত বাংলাদেশ কৃষি ইন্সটিটিউট- কে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উন্নীত করতঃ উক্ত প্রতিষ্ঠানটিকে ‘শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়‘ নামে অভিহিত করেন। প্রতিষ্ঠার প্রথম তিন বছর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাফিলিয়েশনে থেকে পরবর্তীতে এটি একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত হচ্ছে।

কৃষির উন্নয়ন ও উচ্চতর কারিগরী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের অধিভূক্ত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের কৃষি উন্নয়নের গুরুদায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। শিক্ষা কার্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে: বিষয়ভিত্তিক স্নাতক (সম্মান), মাস্টার্স এবং পি এইচ ডি ডিগ্রী। ত্বাত্তিক ও ব্যবহারিক দক্ষ কৃষিবিদ বা কৃষিবিজ্ঞানী তৈরী করাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে কৃষি গবেষণা, প্রযুক্তি উদ্ভাবন,সম্প্রসারণ, প্রচার ও প্রসার- এ উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ অবদান রেখে চলেছে।
একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল উপাদান থাকা প্রয়োজন তার সবই এ বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিপূর্ণতা দান করেছে। শ্রেণীকক্ষ আর গবেষণাগারের বাইরেও রয়েছে বিস্তৃত মাঠ যেখানে লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য ছাত্র-গবেষকগণ নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। রয়েছে সবুজের সমারোহ আর নির্মল বায়ু সেবনের প্রাকৃতিক পরিবেশ। রয়েছে উদ্যান, আবাসিক ভবন, এ্যাকাডেমিক ভবন, প্রশাসন ভবন, মসজিদ, মন্দির, ক্যাফেটেরিয়া ও অন্যান্য ভবন। একাডেমিক তিনটি অনুষদের আওতায় ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ২৫০০ জন। আবাসিক হল রয়েছে ছাত্রদের জন্য তিনটি: শেরেবাংলা হল, নবাব সিরাজদ্দৌলা হল, কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল। আর ছাত্রীদের জন দুইটি: বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল, কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হল।

কৃষি উন্নয়ন ও খাদ্যে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানের গ্র্যাজুয়েটদের ভূমিকা অপরিসীম। বাংলাদেশে কৃষিবিদের মর্যাদা, পেশাভিত্তিক দাবী-দাওয়াসহ প্রকৌশলী-কৃষিবিদ-চিকিৎসক (প্রকৃচি) আন্দোলনে বাংলাদেশ কৃষি ইন্সটিটিউট তথা শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র-ছাত্রী ও গ্র্যাজুয়েটদের ভূমিকা ছিল প্রথম সারিতে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্র-ছাত্রীদেরই প্রাণের সংগঠন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন ইউএসএ, ইনক। সকলের সহযোগিতা, ঐক্য ও সহমর্মিতার প্রত্যয় নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এ সংগঠন বিগত দশ বছর ধরে সফলতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। কেবলমাত্র ‘একতাই বল’ শক্তিতে উজ্জ্বীবিত হয়ে আমাদের প্রাণপ্রিয় সংগঠন ‘শেরেবাংলা কৃষি বিশ্বদ্যিালয় এলামনাই এসোসিয়েশন ইউএসএ, ইনক’ এর উদ্দেশ্য ও আদর্শ প্রতিষ্ঠায় আমরা দৃঢ়পদক্ষেপে এগিয়ে যাব, এটাই প্রত্যাশা।